গণতন্ত্রে বিশ্বাস করলে জামায়াত-শিবিরের ক্রমবর্ধমান জনপ্রিয়তা আপনাকে মেনে নিতে হবে। এক্ষেত্রে, পজিটিভ হতে হবে, নরম্যাটিভ না। গণতন্ত্র বিষয়টা কোয়ান্টিটেটিভ, কোয়ালিটেটিভ না। রাজনীতিতে শেষ বলতে কিছু নাই। ইতিহাসে বিপ্লব, প্রতি-বিপ্লব, সিনথেসিস থাকবেই। আর যদি বিশ্বাস করেন যে জামায়াত-শিবিরের ক্রমবর্ধমান হাইপ অস্বাভাবিক বা অনাকাঙ্ক্ষিত বা জাতির ব্যর্থতা, তাহলে এর দায় শুধু ১৫ বছরের আওয়ামী লীগের না, পূর্ববর্তী শাসন করা বিএনপিসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোরও। বাংলাদেশের অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলো কোনো বিকল্প নজির স্থাপন করতে পারে নি। ইভেন আমার মতে, জুলাই অভ্যুত্থানের 'নায়ক'রাও ভালো উদাহরণ তৈরি করতে পারে নি। ট্যাগিং, আদারিং করে কালচারাল এক্সেপ্টেন্স ধরে রাখতে পারে নি। 'ধর্ম নিয়ে রাজনীতি' করা যাবে না বা 'আমরা করি না' এসব বুলি আওড়ালেও ধর্মীয় প্রভাবের বাইরে গিয়ে রাজনীতি করা এদেশে সম্ভব আদৌ? বিভিন্ন সময়ে জোট, বিশেষ পক্ষকে সুবিধা দেয়া ছাড়া? আপনি তো কালেক্টিভ আবেগকে অস্বীকার করতে পারবেন না, ভাই! আর এই সুযোগে যদি 'ইসলামপন্থী' দলগুলো নিজেদের কৌশল (সেটাও সমালোচনার ঊর্ধ্বে না, সব ইসলামপন্থী দল আদর্শে একও না) কাজে লাগিয়ে জনমানুষকে আকৃষ্ট করে তাহলে আপনি কোন যুক্তিতে/অধিকারে ঠেকাবেন? আর যদি নরম্যাটিভ দৃষ্টিভঙ্গিতে কার কাকে ভোট দেয়া উচিৎ সেটা ঠিক করে দিতে চান, তাহলে তো 'গণতন্ত্র' নয়, 'ফ্যাসিজম'ই ঠিক ছিল! সুতরাং, মেনে নিতে হবে। যা-ই হয়, সেটাই। ভবিষ্যতে গণতান্ত্রিক উপায়ে আওয়ামী লীগ ফিরে আসলে সেটাও।
আমার এধরনের কথার জন্য কেউ আবার 'শিবির' ট্যাগ দিয়েন না। ভোটের আগে সাদিক কায়েম ভাইয়ের সাথে সৌজন্যতামূলক হ্যান্ডশেইক আর শুভেচ্ছা বিনিময়ই এদলের সাথে আমার সর্বোচ্চ ইন্টারেকশন। ব্যক্তিগতভাবে 'সুফিপন্থী' হওয়ায় দ্বিমত, বিতর্কও থাকবে তাদের সাথে। আমাদের মতো লোকের পলিটিক্যাল এলাইনমেন্ট শক্ত অবস্থানে নাই, ছিলোও না। খানকাভিত্তিক, দরবারভিত্তিক কেবল। তাই, আমি নিজেকে মাইনরিটিই মনে করি। তবে, এধরনের লোক নেহায়েত কম না এইদেশে। তাই, আশা রাখি নির্বাচিত প্রতিনিধিরা আমাদের দিকটাও দেখবেন!
মো. রিদওয়ান আল হাসান