মহম্মদ মহসীন- গোলাম মোস্তফা


 পুণ্যশ্লোক, দানবীর, মহাপ্রাণ, হে হাজি মহসীন! 

কে বলে মরেছ তুমি? হে অমর আছ চিরদিন। 

আজো তাই যাও মাই বেহেস্তের নন্দন-কাননে, 

আজিও ঘুরিছ তুমি ব্যথিতের কুটির-প্রাঙ্গণে। 

অনাহারে কে রয়েছে, কাঁদিতেছে কোন ব্যথাতুর, 

শোক দুঃখে লাঞ্চনায় আজি কার অন্তর বিধুর, 

কে রয়েছে ঘুমাইয়া অজ্ঞতার নিবিড় তিমিরে 

আলোকের যাত্রাপথে দৈন্যাহত কারা আসে ফিরে, 

আজিও ফিরিছ তাই পথে পথে করিয়া সন্ধান, 

অন্ধজনে করিতেছ দ্বারে দ্বারে জ্ঞানালোক দান! 

সবার আত্মীয় ছিল, বন্ধু ছিল, হে মৌনী তাপস! 

জ্ঞানাঞ্জন শলাকায় ঘুচায়েছ অজ্ঞান তামস। 

মানুষ সে প হৌক- তবু সে যে আপনার ভাই, 

এ কথা তোমার মতো আর কেহ কভু বুঝে নাই। 

বঙ্গের 'হাতেম' তুমি, 'নব কর্ণ' হে যুগ-পাবন! 

আবু-বকরের মতো বিলাইলে সর্বস্ব আপন। 

আপন সম্পদ দিলে বিলাইয়া পরের লগিয়া, 

দৈন্যের বল্কলখনি নিলে তুমি আপনি মাগিয়া। 


হে মহসীন! তব তরে মণি-মুক্তা-হীরক-খচিত 

নূতন এমামবাড়া স্বর্গলোকে হতেছে রচিত। 

রোজ-কেয়ামৎ শেষে সে বিরাট মর্মর-প্রাসাদে 

দীন দুঃখী ব্যথিতেরে যাবে কি গো নিয়ে তব সাথে?

নবীনতর পূর্বতন